কক্সবাজার জার্নাল ডটকম :
কক্সবাজারের টেকনাফ বন বিভাগের পাহাড়ে কাজ করার সময় ১৮ জন শ্রমিককে অপহরণ করে নিয়ে যায় ডাকাত দল। এ ঘটনায় অপহৃত ১৮ বনকর্মীকে উদ্ধার করেছে এলিট ফোর্স র্যাব (র্যাপিড একশন ব্যাটলিয়ন)।
মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় তাদের উদ্ধার করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজার র্যাব-১৫ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন।
তিনি বলেন, আমাদের তৎপরতায় ১৮ জন বনবিভাগের শ্রমিককে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছে। বাকি অপহৃত কৃষককে উদ্ধারের অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান তিনি।
টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন জানান, উদ্ধার হওয়াদের পাহাড় থেকে বের করা হচ্ছে। তাদের থানায় আনা হলে জিজ্ঞাসাবাদ করে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করা হবে।
এদিকে, মঙ্গলবার সকাল ৮ টার দিকে টেকনাফের হোয়াইক্যং-শামলাপুর সড়কে দুইটি অটোরিকশা থামিয়ে চালকসহ ৮ জনকে অপহরণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন শামলাপুর সিএনজি অটোরিকশার লাইনম্যান মো. আবদুর রহিম।
তিনি বলেন, সকাল আনুমানিক ৮টার দিকে হোয়াইক্যং থেকে আসা শামলাপুরগামী দুটি সিএনজি অটোরিকশা হোয়াইক্যং-শামলাপুর সড়কে পৌঁছালে ঢালা থেকে ডাকাতদলের সদস্যরা দুটি সিএনজির চালকসহ আনুমানিক ৮ জনকে অপহরণ করেছে বলে জানা গেছে। খবর পেয়ে বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে। তবে অপহৃতদের নাম-ঠিকানা জানা যায়নি।
বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক শোভন কুমার শাহা জানিয়েছেন, হোয়াইক্যং- শামলাপুর সড়কে দুইটি সিএনজি অটোরিকশা থেকে চালকসহ যাত্রী অপহরণের ঘটনা শুনে অভিযান চালানো হচ্ছে। কতজন অপহরণ হলেন সেটার সঠিক তথ্য এখনো জানা যায়নি। সিএনজি দুইটি উদ্ধার করা হয়েছে।
এর আগে সোমবার রাত ১১ টার দিকে টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নেরবড় ডেইল এলাকার বাসিন্দার নাজিম উদ্দিন মাস্টারের ছেলে জসিম উদ্দিনকে অপহরণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাহারছড়ার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য নুরুল ইসলাম।
তিনি জানান, স্বশস্ত্র সন্ত্রাসীরা ১৫-২০ রাউন্ড ফাঁকা গুলি বর্ষণ করে দক্ষিণ বড় ডেইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রাস্তার মাথা নিজ মুদির দোকান থেকে জসিমকে অপহরণ করে পাহাড়ের ভেতর নিয়ে যাওয়া হয়েছে। অপহরণের পর এখনও সন্ত্রাসীদের পক্ষে কোন যোগাযোগ করা হয়নি।
জসিমকে উদ্ধারেও পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে বলে জানিয়েছেন বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক শোভন কুমার শাহা।
হ্নীলা ইউপির ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আলী বলেন, পাহাড়ে থাকা রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা একের পর এক অপহরণের ঘটনা ঘটাচ্ছে। এরপর মুক্তিপণ আদায় করে ধরে নিয়ে যাওয়া লোকজনকে ছেড়ে দেয়। সন্ত্রাসীদের দাবি করা টাকা না ফেলে অপহৃরিতদের নানান ধরনের নির্যাতন করা হয়। এলাকার লোকজন অপহরণ আতঙ্কের মধ্যে বসবাস করছে।
টেকনাফ থানার তথ্যমতে, ২০২৪ সালের ১৮ আগষ্ট থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত টেকনাফ থানায় অপহরণের মামলা হয়েছে ১৪ টি। এসব মামলায় আসামির সংখ্যা অন্তত ৬৫। এ পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৩০ জনকে।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-